কত বয়স থেকে কত বয়স পর্যন্ত সিরাম ব্যবহার করা উচিত

কত বয়স থেকে কত বয়স পর্যন্ত সিরাম ব্যবহার করা উচিত

স্কিনকেয়ারে সিরাম এমন একটা প্রোডাক্ট যার ভেতর উচ্চ ঘনত্বের সক্রিয় উপাদান রয়েছে এবং যা ত্বকের নির্দিষ্ট কোন উদ্বেগ যেমন বার্ধক্য, হাইপারপিগমেন্টেশন এবং হাইড্রেশনের মত সমস্যা সমাধানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। সিরাম ব্যবহারের জন্য বয়সের নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই। কারণ সিরামের কার্যকারিতা মূলত একজন ব্যক্তির ত্বকের ধরন, উদ্বেগ এবং লক্ষ্যগুলির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত ২০ বছরের মাঝামাঝি সময়ে সিরাম ব্যবহার শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয় কারণ এই সময় আমাদের ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ এবং ত্বকের অন্যান্য উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। সিরামের ব্যবহার থাকা উপাদানগুলি অল্প বয়স্ক ব্যক্তির ত্বকে প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রদান করার পাশাপাশি ত্বককে বাহিরের পরিবেশগত চাপ থেকে রক্ষা করে। অন্য দিকে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য এমন একটি সিরাম প্রয়োজন যা তাদের ত্বকের বার্ধক্যের নির্দিষ্ট লক্ষণগুলি যেমন বলি, সূক্ষ্ম রেখা এবং হাইপারপিগমেন্টেশন কমানোর পাশাপাশি ত্বককে রাখবে আরও উজ্জ্বল, আরও প্রানবন্ত। আমাদের আজকের এই ব্লগে আমরা জানবো কোন বয়স থেকে কোন সিরাম ব্যবহার করা উচিত। 

কোন বয়স থেকে সিরাম ব্যবহার করা উচিত 

আপনার ত্বকের সমস্যা এবং প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে ত্বকের যত্নে সিরামের ব্যবহার করা উচিত। তবে সাধারণত আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে সিরাম তখনই অন্তর্ভুক্ত করবেন যখন আপনি ত্বকের নির্দিষ্ট সমস্যাগুলি লক্ষ্য করতে শুরু করেন। সাধারনত কিশোর বয়সের শেষের দিকে বা যৌবনের প্রথম দিকে সিরম ব্যবহার করা ভালো। কখন আপনি আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে সিরাম ব্যবহার শুরু করবেন তার একটি সাধারণ ধারনা এখানে দেওয়া হলঃ

 ১৮ থেকে ২০ বছরের শুরুর দিকেঃ এই সময় আমাদের অনেকের ত্বকেই ব্রণ, হাইপারপিগমেন্টেশন বা ত্বকের গঠন অমসৃণ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই নির্দিষ্ট উদ্বেগের সমাধান করতে এই সময়ে সিরাম ব্যবহার শুরু করতে পারেন।  

২০ বছরের মাঝামাঝি থেকে ৩০ বছরের প্রথম দিকেঃ আমাদের বয়স যখন ২০ বছরের মাঝামাঝি থেকে ৩০ বছরের শুরুতে পৌঁছায় তখন আমাদের ত্বকে হাইড্রেশন কমে যায় এবং বার্ধক্যের লক্ষন গুলো ত্বকে ফুটে ওঠে। তাই ত্বকের হাইড্রেশন এবং বার্ধক্যের লক্ষন গুলো প্রতিরোধের জন্য সিরাম ব্যবহার করা উচিত। 

৩০ বছর থেকে আরও বেশি বয়স পর্যন্তঃ ৩০ বছর বয়সে আমাদের সবার ত্বকে স্বাভাবিকভাবেই বার্ধক্যের লক্ষণ গুলো আরও দৃশ্যমান হয়। যার কারণে ত্বকে বলি রেখা এবং সূক্ষ্ম রেখার পাশাপাশি ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যায়। এই সময়ে সিরাম ত্বকের এই নির্দিষ্ট উদ্বেগগুলিকে সমাধান করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনার ত্বকের  নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য সঠিক সিরামের ব্যবহার বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা স্কিনকেয়ার স্পেশালিষ্টের সাথে পরামর্শ করে আপনার ত্বকের চাহিদা অনুসারে সঠিক সিরাম বেছে নিন। ভালো ফলাফল পেতে আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে কোনো নতুন পণ্য যোগ করার আগে সর্বদা একটি প্যাচ টেস্ট করে নিন যাতে আপনার ত্বকে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা জ্বালা সৃষ্টি না হয়।

বয়স ভেদে সিরামের বাবহার

#কত বয়স থেকে কত বয়স পর্যন্ত সিরাম ব্যবহার করা উচিত
#কত বয়স থেকে কত বয়স পর্যন্ত সিরাম ব্যবহার করা উচিত

কিশোর বয়স থেকে শুরু করে জীবনের শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর রাখতে চাই। তবে অনেক সময় সঠিক পণ্য বা সঠিক নিয়ম না জানার বা মানার কারণে আমরা অনেকেই তা বজায় রাখতে পারিনা। কোন বয়সে কোন সিরাম আমাদের ত্বকের জন্য উপকারি তার একটা বর্ননা এখানে দেওয়া হলঃ

১৮ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত যে সিরাম ব্যবহার করা ভালো

হাইড্রেশন সিরামঃ  এই হালকা ওজনের সিরামটি তেল চটচটে ভাব ছাড়াই ত্বকে হাইড্রেশন প্রদান করে এবং ত্বকের আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় রাখে। যাদের ত্বক শুষ্ক বা ডিহাইড্রেটেড তাদের জন্য এই সিরাম খুবই উপকারি। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সিরামঃ এই সিরামে ভিটামিন সি এর মত কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যা  বাহিরের দূষণ এবং অতিবেগুনী বিকিরণের মতো পরিবেশগত চাপ থেকে ত্বককে রক্ষা করার পাশাপাশি ত্বককে করে উজ্জ্বল ও প্রানবন্ত। 

মৃদু এক্সফোলিয়েটিং সিরামঃ এই সিরাম গুলি গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা ল্যাকটিক অ্যাসিডের মতো হালকা এক্সফোলিয়েটিং উপাদান দিয়ে তৈরি যা ত্বকের কোষের টার্নওভার বাড়ায়, দাগ কমায় এবং ত্বককে করে আরও মসৃণ, আরওপ্রানবন্ত।

নন-কমেডোজেনিক সিরামঃ যাদের ত্বক ব্রণ প্রবণ বা তৈলাক্ত তাদের জন্য নন-কমেডোজেনিক সিরাম একটি সঠিক পছন্দ। কারণ এই সিরাম পোরস বা ছিদ্রে আটকে থাকা ময়লা পরিস্কার করে ত্বকের ব্রেকআউট কমায় এবং ত্বকের উজ্জলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

২০ বছরের মাঝামাঝি থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত যে সিরাম ব্যবহার করা ভালো 

আপনার বয়স যদি ২০ বছরের মাঝামাঝি থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে এমন একটি সিরাম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা আপনার ত্বকের বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে মোকাবেলা করার পাশাপাশি ত্বকের সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এখানে কিছু সিরামের ব্যবহার কথা বর্ননা করা হল যা এই বয়সে অনেক উপকারী হতে পারেঃ 

ভিটামিন সি সিরামঃ এই সিরামগুলি ত্বককে উজ্জ্বল করে, ত্বকের টোন উন্নত করে এবং ত্বকের কালো দাগ বা হাইপারপিগমেন্টেশন কমায়। এই সিরামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে পরিবেশগত চাপ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। 

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সিরামঃ হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত সিরামগুলি তীব্র হাইড্রেশন প্রদান করে, ত্বককে প্লাম্পিং করে এবং ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়। এই সিরামগুলি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে নমনীয় এবং মসৃণ করে।  

রেটিনল সিরামঃ রেটিনল সিরাম ত্বকের গঠন উন্নত করে, সূক্ষ্ম রেখা ও বলির উপস্থিতি কমায় এবং কোলাজেন উত্পাদনকে বৃদ্ধি করে। এই সিরাম ত্বকের সামগ্রিক চেহারার পরিবর্তন করে এবং পোরস মিনিমাইজ বা ছিদ্রের আকার কমাতে সাহায্য করে।

পেপটাইড সিরামঃ এই সিরাম কোলাজেন উত্পাদন বৃদ্ধি করে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়। পেপটাইড সিরাম আপনার ত্বকের বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলি কমাতে এবং চেহারায় তারুণ্যের ছাপ বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা ল্যাকটিক অ্যাসিড সিরামঃ এই মৃদু এক্সফোলিয়েট সিরামগুলি ত্বকের কোষের টার্নওভার বাড়িয়ে তোলে এবং ত্বকের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে। এই সিরাম ত্বকের নিস্তেজতা, ত্বকের অমসৃণ স্বর এবং ত্বকের হালকা বিবর্ণতার মতো উদ্বেগের সমাধান করতে বেশ কার্যকর।

৩০ বছর থেকে আরও বেশি বয়স পর্যন্ত যে সিরাম ব্যবহার করা ভালো 

আপনার বয়স যদি ৩০ বছর বা তার বেশি হয়ে থাকে তাহলে এমন একটি সিরাম আপনার দরকার যা আপনার ত্বকে ফুটে ওঠা আরও স্পষ্ট বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে মোকাবেলা করার পাশাপাশি সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্যকে সন্দর রাখবে। এই বয়সে কোন সিরাম ব্যবহার করা ভালো তার বর্ননা এখানে দেওয়া হলঃ 

রেটিনল বা রেটিনয়েড সিরামঃ এই সিরামগুলি ত্বকের সূক্ষ্ম রেখা, বলিরেখা, ত্বকের অসম গঠন, এবং কোলাজেন উত্পাদনকে বাড়াতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের স্বর উন্নত করতে এবং ত্বক থেকে বয়সের দাগ কমাতে এই সিরাম বেশ উপকারি।

পেপটাইড সিরামঃ পেপটাইডগুলি কোলাজেন উত্পাদনকে উদ্দীপিত করে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়াতে সাহায্য করে যা ত্বকের সূক্ষ্ম রেখা এবং বলির উপস্থিতি কমায়। এই সিরাম ত্বককে দৃঢ় এবং আঁটসাঁট করতে সাহায্য করে যার কারণে আপনার ত্বক হয়ে ওঠে আরও তারুণ্যময়। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ সিরামঃ ভিটামিন সি এবং ই-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ সিরাম বাহিরের পরিবেশের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করার পাশাপাশি সূক্ষ্ম রেখা এবং বলির উপস্থিতি কমায়। এই সিরাম আপনার ত্বককে করে আরও উজ্জ্বল,আরও প্রানবন্ত।

হায়ালুরোনিক অ্যাসিড সিরামঃ এই সিরামগুলি ত্বকের হাইড্রেশন বজায় রেখে ত্বককে মোটাতাজা করে এবং ত্বকের সূক্ষ্ম রেখা,বলি রেখার উপস্থিতি কমায় যা আপনার ত্বকে দেয় তারুণ্যের ছোঁয়া।

গ্রোথ ফ্যাক্টর সিরামঃ এই সিরামগুলি ত্বকের কোষের বৃদ্ধি এবং ত্বকের মেরামত করার পাশাপাশি কোলাজেন এবং ইলাস্টিন উত্পাদন বৃদ্ধি করে যার ফলে সূক্ষ্ম রেখা এবং বলির উপস্থিতি কমে যায়। মোট কথা আপনার ত্বকের ধরন এবং চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সিরাম বেছে নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তবে সিরামগুলি অবশ্যই আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে ধীরে ধীরে যোগ করা উচিত কারণ সিরামে বেশ কিছু সক্রিয় উপাদান রয়েছে যা আপনার ত্বকের সংবেদনশীলতার কারণ হতে পারে। তাই আপ্নাআর ত্বকের জন্য সঠিক সিরাম বেছে নিতে প্রয়োজনে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা স্কিনকেয়ার স্পেশালিষ্টের সাথে  পরামর্শ করুন। নতুন কোন স্কিন কেয়ার পণ্য ব্যবহার করার আগে একটি প্যাচ পরীক্ষা করুন যাতে পণ্য গুলি আপনার ত্বকের কোন ক্ষতি করতে না পারে।   ১০০% অথেনটিক  এবং নিত্যনতুন স্কিন কেয়ার পণ্য কিনতে ক্লিক করুন এখানে https://mumolifestyle.com/product-category/skincare-items/?v=fbd25224d617   Facebook Page: https://www.facebook.com/MumoLifeStyle123

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *