ত্বকের উপর ভিত্তি করে কীভাবে সঠিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন?

ত্বকের উপর ভিত্তি করে কীভাবে সঠিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন

ত্বক একটি শক্তিশালী বাধা হিসাবে কাজ করে, যা শারীরিক আঘাত, প্যাথোজেন, অতিবেগুনী বিকিরণ এবং রাসায়নিক সহ পরিবেশগত বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করে। আমাদের ত্বকে একধরনের সংবেদনশীল রিসেপ্টর রয়েছে যা আমাদের স্পর্শ, ব্যথা এবং তাপমাত্রার তারতম্যের মতো সংবেদনগুলি উপলব্ধি করতে এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম করে। আমাদের একেক জনের ত্বক একেক রকম হয়ে থকে।ত্বকের যত্নে আমরা অনেকেই অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকি। ত্বককে সুন্দর রাখতে বা ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে আমরা কেউই যত্নের কোন কমতি রাখিনা। তার পরেও সঠিক যত্নের অভাবে আমাদের ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জলতা হারিয়ে ফেলে। একেক ত্বকের যত্ন একের রকম হয়। ত্বকের ধরনের উপর ভিত্তি করে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন সেটা জানার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক ত্বক কাকে বলে এবং কিভাবে ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।  

ত্বক কাকে বলে

ত্বক বা স্কিন(Skin)হল শরীরের বৃহত্তম অঙ্গ এবং শরীরের সমগ্র বাহ্যিক পৃষ্ঠকে আবৃত করে। এটি তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত, এপিডার্মিস(Epidermis),ডার্মিস(Dermis) এবং হাইপোডার্মিস(Hypodermis), এই তিনটিই তাদের অ্যানাটমি এবং ফাংশনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়।

আমাদের ত্বক কত ধরনের হয়ে থাকে

ত্বকের ধরন জেনেটিক্স দ্বারা নির্ধারিত হয়। এটি ত্বকের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক বিভিন্ন কারণগুলির উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।এই বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্যকর ত্বকের পাঁচটি মৌলিক  প্রকার রয়েছেঃ 

  • নরমাল বা স্বাভাবিক ত্বক।
  • ড্রাই বা শুষ্ক ত্বক।
  • অয়েলি বা তৈলাক্ত ত্বক।
  • কম্বিনেশন বা সংমিশ্রণ ত্বক।
  • সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বক। 

কি করে বুঝবেন আপনার ত্বক কেমন

নরমাল বা স্বাভাবিক ত্বকঃ নরমাল বা স্বাভাবিক ত্বক হল এমন ত্বক যা খুব বেশি শুষ্ক বা তৈলাক্তও নয়। এই ত্বকের টেক্সচার রেগুলার যার কোনও অপূর্ণতা নেই। এক কথাই এটি একটি পরিষ্কার, নরম চেহারা যার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না। তাই আপনার ত্বক যদি বেশি শুষ্ক বা তৈলাক্ত না হয় তাহলে বুঝবেন আপনার ত্বকটি নরমাল বা স্বাভাবিক অবস্থায় আছে।  

ড্রাই বা শুষ্ক ত্বকঃ ড্রাই বা শুষ্ক ত্বক হল এমন ত্বক যা বাহ্যিক কারণ যেমন আবহাওয়া, কম বাতাসের আর্দ্রতা এবং গরম পানির কারণে শুকিয়ে যায়। যদিও এটি অস্থায়ী তবে কিছু লোকের জন্য এটি প্রায়শই ঘটতে পারে এবং এমনকি সারাজীবনের অবস্থা হতে পারে। যেহেতু শুষ্ক ত্বক ফেটে যায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আরও বেশি খতিগ্রস্থ্য হয়ে যায় তাই সঠিক সময় যত্ন না নিলে একজিমা বা ত্বকের অন্যান্য রোগের কারণ হতে পারে।শুষ্ক ত্বকের লক্ষণগুলি বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে যেমন বয়স বা স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। রুক্ষতার অনুভূতি হলে বুঝবেন আপনার ত্বকের নিবিড় যত্ন প্রয়োজন। কখনও কখনও আপনার ত্বক ছাই ধূসর বর্ণও ধারণ করতে পারে যার সাথে ক্ষয়, চুলকানি, লালভাব এবং ছোট ফাটল দেখা দিতে পারে। তবে সাধারণত খুব শুষ্ক ত্বকে ফাটল  পরিলক্ষিত হয় এবং আরও গুরুতর ক্ষেত্রে এই ফাটল গভীর হতে পারে এবং এমনকি রক্তপাত হতে পারে। শুষ্ক ত্বকের কারণে এটোপিক স্কিন(Atopic skin) বা একজিমা হতে পারে যা ত্বককে বিবর্ণতা ও জ্বালার দিকে ধাবিত করে এবং চুলকানির মতো বিরক্তিকর উপসর্গ সৃষ্টি করে। যদিও এর প্রধান কারণ হল জিনগত প্রবণতা তবে অন্যান্য কারণগুলি এটির সংঘটনকে ট্রিগার করতে পারে বা অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এছাড়াও পরিবেশগত কারণ, অ্যালার্জি, খাবার বা পোশাকের  সাথে সম্পর্কিত কারনেও এমন হতে পারে।  

অয়েলি বা তৈলাক্ত ত্বকঃ তৈলাক্ত ত্বক সাধারনত ছিদ্রযুক্ত, আর্দ্র এবং উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এটি সেবেসিয়াস গ্রন্থি(Sebaceous glands) দ্বারা অত্যধিক চর্বি উত্পাদনের কারণে ঘটে এবং সাধারণত জেনেটিক এবং/অথবা হরমোনজনিত কারণে হয়ে থাকে। এটি প্রায়শই কিশোর এবং 30 বছরের কম বয়সী মানুষের মধ্যে দেখা যায় এবং এর কারণে ব্রণ(acne) হতে পারে।

কম্বিনেশন বা সংমিশ্রণ ত্বকঃ এটি ত্বকের এমন আক অবস্থা যা শুষ্ক এবং তৈলাক্ত উভয় ত্বকের বৈশিষ্ট্য উপস্থাপন করে। কারণ সেবেসিয়াস এবং ঘাম গ্রন্থিগুলির কাজের ধরন এক না। এমন ত্বকে বেশি তেলযুক্ত অঞ্চলটি সাধারণত টি-জোন (কপাল, নাক এবং চিবুক) এবং গালের ত্বক স্বাভাবিক বা শুষ্ক থাকে।

সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকঃ সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকে উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ার প্রবণতা বেশি থাকে কিন্তু স্বাভাবিক ত্বকের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। এটি একটি ভঙ্গুর ত্বক যা অস্বস্তির অনুভূতি প্রকাশ করে যেমন তাপ, আঁটসাঁট, লালভাব বা চুলকানি। এই ধরনের ত্বক তার বাধা (প্রতিরক্ষামূলক) বা কার্যকারিতা হারায়। এমন ত্বকে সহযেই অণুজীব এবং বিরক্তিকর পদার্থ প্রবেশ করতে পারে যার কারণে সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এটি এমন এটি একটি সূক্ষ্ম ত্বক যার শুষ্কতা এবং রুক্ষতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও যত্নের প্রয়োজন। কখনও কখনও এমন ত্বককে সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকের পরিবর্তে বিরক্তিকর ত্বক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। 

ত্বকের যত্নে কেন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন

প্রতিদিনের স্কিনকেয়ার রুটিনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ত্বকের যত্নের জন্য ময়েশ্চারাইজার কেন অপরিহার্য তা এখানে বর্ননা করা হলঃ

ত্বকের হাইড্রেশন বজায় রাখেঃ  ময়েশ্চারাইজারগুলি ত্বকের হাইড্রেশনের মাত্রা পূরণ করে ত্বককে শুষ্ক, ফ্ল্যাকি বা রুক্ষ হতে বাধা দেয়। ত্বক সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকলে আরও উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর এবং তরুণ দেখায়।

ত্বকের গঠন উন্নত করেঃ নিয়মিত ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার ত্বকের সামগ্রিক গঠন উন্নত করে, মসৃণ এবং নরম করে তোলে। এটি ত্বকের সূক্ষ্ম রেখা এবং বলি রেখা কমিয়ে ত্বককে আরও নমনীয় এবং তারুণ্যময় করে তোলে।   

ত্বকের বেরিয়ার বা বাঁধ শক্তিশালী করেঃ  ত্বকের সঠিক ময়েশ্চারাইজার যখন ভেতর থেকে ভাল ভাবে হাইড্রেটেড থাকে তখন ত্বকের বাহিরের বেরিয়ার বা বাঁধ পরিবেশগত দূষণকারী, কঠোর আবহাওয়া এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে আমাদের রক্ষা করে। ময়েশ্চারাইজারগুলি ত্বকের এই প্রাকৃতিক বেরিয়ার বা বাঁধ ফাংশনকে শক্তিশালী করে সুরক্ষার একটি অতিরিক্ত স্তর প্রদান করে। 

ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধ করেঃ অনেকের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালা, লালভাব এবং একজিমা বা ডার্মাটাইটিস। নিয়মিতভাবে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করা এই সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করতে এবং সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নীত করতে সাহায্য করে। 

অয়েল ব্যালেন্স করেঃ ময়েশ্চারাইজারগুলি আপনার ত্বকের তেল উৎপাদনের ভারসাম্য বজায় রাখে। ত্বক যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেটেড থাকে, তখন এটি শুষ্কতার ক্ষতিপূরণের জন্য অতিরিক্ত তেল তৈরি কমিয়ে দিয়ে ব্রেকআউট এবং ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

অন্যান্য পণ্যের কার্যকারিতা বাড়ায়ঃ  অন্যান্য স্কিনকেয়ার পণ্যের আগে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকে একটি হাইড্রেটেড বেস তৈরি হয় যা পরবর্তী পণ্যগুলিকে ত্বকে আরও কার্যকরভাবে প্রবেশ করতে সাহায্য করে।আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর, সুষম এবং হাইড্রেটেড রাখতে আপনার দৈনন্দিন স্কিনকেয়ার রুটিনে একটি সঠিক ময়েশ্চারাইজার অন্তর্ভুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ময়েশ্চারাইজার শুধুমাত্র ত্বকের সামগ্রিক চেহারা এবং টেক্সচারকে উন্নত করে না বরং পরিবেশগত চাপের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক বাধা প্রদান করে যা আপনার ত্বককে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভালো রাখে।

কোন ত্বকে কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন

আপনার ত্বকের জন্য সঠিক ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করা স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল বর্ণ বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। আপনার ত্বকের ধরণের উপর ভিত্তি করে ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে আপনার সহায়তা জন্য এখানে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলঃ

:নরমাল স্কিন বা স্বাভাবিক ত্বকঃ একটি হালকা, পানি-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যা ত্বককে ভারী না করে ত্বকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন বা আর্গান তেল যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। 

ড্রাই স্কিন বা শুষ্ক ত্বকঃ আপনার ত্বক যদি শুস্ক হয় তাহলে একটি সমৃদ্ধ, ক্রিম-ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যা গভীর হাইড্রেশন সরবরাহ করে এবং আর্দ্রতা লক করতে সহায়তা করে। শিয়া বাটার, সিরামাইড বা প্রাকৃতিক তেল যেমন অ্যাভোকাডো তেল বা নারকেল তেলের মতো উপাদান সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

অয়েলি স্কিন বা তৈলাক্ত ত্বকঃ তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি তেল-মুক্ত, হালকা ওজনের ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যা পোরস বা ছিদ্র আটকাবে না বা অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করবে না। এক্ষেত্রে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন বা জোজোবা তেলের সংমিশ্রণ রয়েছে এমন নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

কম্বিনেশন স্কিন বা মিশ্রণ ত্বকঃ কম্বিনেশন স্কিন বা মিশ্রণ ত্বকের জন্য একটি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা হাইড্রেশন এবং লাইটওয়েট টেক্সচারের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি ত্বককে অতিরিক্ত শুকিয়ে যেতে দেবে না বা কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে অতিরিক্ত হাইড্রেট করে না। তেল চটচটে ভাব এড়াতে হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো উপাদান সহ পানি-ভিত্তিক বা হালকা লোশন ময়েশ্চারাইজারগুলি ব্যবহার করুন।

সেনসিটিভ স্কিন বা সংবেদনশীল ত্বকঃ আপনার ত্বক যদি সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল হয়ে থাকে তাহলে একটি মৃদু, সুগন্ধমুক্ত, এবং হাইপোঅ্যালার্জেনিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যা ত্বকে জ্বালা বা অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাবে। অ্যালোভেরা, ক্যামোমাইল বা কলয়েডাল ওটমিলের মতো প্রশান্তিদায়ক উপাদান রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।

আপনার ত্বকের জন্য কোন ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন

#ত্বকের উপর ভিত্তি করে কীভাবে সঠিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন
#ত্বকের উপর ভিত্তি করে কীভাবে সঠিক ময়েশ্চারাইজার বেছে নেবেন

আপনার যদি ব্রণ-প্রবণ এবং তৈলাক্ত ত্বক থাকে, তাহলে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন বা জোজোবা তেলের সংমিশ্রণ রয়েছে এমন নন-কমেডোজেনিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয় শিয়া বাটার, সিরামাইড বা প্রাকৃতিক তেল যেমন অ্যাভোকাডো তেল বা নারকেল তেলের মতো উপাদান সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। আর আপনার ত্বক যদি সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল হয়ে থাকে তবে অ্যালোভেরা, ক্যামোমাইল বা কলয়েডাল ওটমিলের মতো প্রশান্তিদায়ক উপাদান রয়েছে এমন ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।আপনার ত্বক কেমন সেটা আপনি ভালো জানেন। তাই নিজের ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে ত্বকের জন্য সঠিক ময়েশ্চারাইজার বাছাই করুণ এবং নিজের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলুন।    ১০০% অথেনটিক  এবং নিত্যনতুন স্কিন কেয়ার পণ্য কিনতে ক্লিক করুন এখানে https://mumolifestyle.com/product-category/skincare-items/?v=fbd25224d617  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *