গরমে কেমন পোশাক পরা উচিত?

গরমে কেমন পোশাক পরা উচিত

শীতের কোমল পরশ শেষ হতে না হতেই গ্রীষ্মের প্রখরতা তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশে গরম আবহাওয়া থাকলেও সবচেয়ে বেশি উষ্ণ সময় হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। দৈনন্দিন কাজে আমাদের প্রতিনিয়তই ঘরের বাইরে বের হতে হয়। তাই সূর্যের প্রখর রোদ ও গরম থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের পোশাক নির্বাচন হওয়া চাই আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল যা আবহাওয়া উপযোগী।  আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সকল বয়সি মানুষের অন্য সব অভ্যাসের পাশাপাশি পোশাক-আশাকেও অনেক পরিবর্তন চলে আসে । কেননা পোশাকের মাধ্যমে যেমন আপনার স্মার্টনেস প্রকাশ পায়, তেমনি আপনি কতটা স্বস্তিতে আছেন সেটাও বোঝা যায়। তাইতো গরম এলেই সবাই চায় আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল পোশাক পরতে।আমাদের আজকের এই আয়োজনে আমরা জানবো  এই সময়ের পোশাক-আশাক এবং ফ্যাশন সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেখে নেই কি কি বিষয়ে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।       

গরমের পোশাক -আশাক যেমন হতে হবে

সুতির জামা পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে গরমের দিনে সুতির জামা সবারই পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে। এই প্রখর গরমে নিজেকে ফিট আর গর্জিয়াস রাখতে মহিলারা সুতির কুর্তি, টপ বা শাড়ি পরতে পারেন এবং পুরুষরা কটন শার্ট বা পাঞ্জাবির সাথে জিন্স পরতে পারেন। তবে গরমের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে জামার রঙ বাছাই করাটা খুব জরুরি। তাই চেষ্টা করবেন একদম হালকা রঙের জামা তাতে আরামের পাশাপাশি স্বস্তিতে থাকবেন।গরমকালে পরার জন্য পারফেক্ট রং হলো সাদা। এছাড়াও হালকা গোলাপি, হালকা আকাশি, অলিভ গ্রীন, ক্রিম কালার বা অফ হোয়াইট রঙের পোশাকেও নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন। টাইট পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন কেননা গরমে স্বস্তির জন্য ঢিলেঢালা পোকাশ পরাটাই শ্রেয়।রোদে বেরলে অবশ্যই ফুলহাতা জামা পরবেন। অফিসে গেলে একটা জামা ক্যারি করতে পারেন, ঘামে জামা নষ্ট হয়ে গেলে, কাজে লাগবে। গরমের পোশাক-আশাকে সুতি বা রেয়নের ট্রাউসার বা প্যান্ট পরতে পারেন।আর আপনার পা আরামে রাখতে স্নিকার্স বা লোফারের মত ব্রিদেবল স্যান্ডেল বা সুজ ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবহাওয়া উপযোগী পোশাক নির্বাচন করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এজন্য গরমে পরিধানের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো রাখা উচিত তার একটা বর্নণা এখানে দেওয়া হলো।      

হালকা ফেব্রিক এর পোশাক 

গরমের জন্য ভারী কাপড় এড়িয়ে সুতি বা লিলেনের মত পাতলা এবং আরামদায়ক কাপড়ের পোশাক ব্যবহার করুন। এগুলো খুব সহজেই শরীরের ঘাম শুষে নিয়ে আপনাকে স্বস্তিতে রাখবে। বাজারে নানান রকমের প্রিন্টের সুতি কিংবা লিলেন কাপড় পাওয়া যায় যা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তবে  অনুষ্ঠান এবং জায়গা ভেদে কাপড়ের ধরণ পরিবর্তন করতে পারেন। আবার বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে শিফন কিংবা জর্জেট কাপড়ের পোশাক পরতে পারেন কারণ এই কাপড়গুলোও বেশ আরামদায়ক হওয়ার পাশাপাশি অনেক ফ্যাশনেবল হয়ে থাকে।  

হালকা রঙের পোশাক 

গরমের দিনে পোশাকের রঙ এমন হওয়া উচিত যা রোদের তাপ কম শোষণ করে বাইরের তাপমাত্রা থেকে শরীরকে রক্ষা করবে।এজন্য গরমে হালকা রঙের পোশাক নির্বাচন করা উচিত। কালো বা খয়েরির মত গাঢ় রঙের কাপড় এড়িয়ে চলাই উত্তম। এসময় যেকোনো পোশাকের ক্ষেত্রে সাদা, গোলাপি,আকাশি,নীল,বেগুনি,সবুজের মত হালকা রঙকে প্রাধান্য দিন। কারণ হালকা রঙের কাপড় আপনার শরীর দেবে আরাম আর চোখে এনে দেবে প্রশান্তি।

ঢিলেঢালা পোশাক 

গরমের দিনে একটু ঢিলেঢালা পোশাক বেশ আরামদায়ক এবং শরীরে বাতাস চলাচল করতে সাহায্য করবে। তাই টি-শার্ট,ফতুয়া,কুর্তি,সালোয়ার,কামিজ, কিংবা শাড়ী যাই পরুন না কেন টাইট ফিটিং পরিধান না করাই উত্তম। কারণ ফিটিং কাপড় পরলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি ঘামতে শুরু করবেন যার কারণে শরীর আঠালো হয়ে আপনি অস্বস্তিবোধ করবেন। তাই যে ধরণের পোশাকই পরুন না কেন চেষ্টা করবেন যাতে পোশাকটি আরামদায়ক এবং ​ঢিলেঢালা হয়।  

পোশাকের ধরণ 

গরমের দিনে অবশ্যই পাতলা এবং হালকা রঙের কাপড় বাছাই করতে চেষ্টা করবেন।ফুলহাতা পোশাক না পরে স্লিভলেস কিংবা হাফহাতা পোশাক পরার চেষ্টা করুন যা গরমে অনেকটাই স্বস্তিদায়ক হবে। যারা নিয়মিত শাড়ি পড়তে পছন্দ করেন তারা হালকা সুতি শাড়ি বা জর্জেট শাড়ী অনায়াসে পরতে পারেন। এর বাইরেও দেশীয় ব্লক,বাটিক কিংবা টাঙ্গাইলের শাড়ি রয়েছে যা গরমে নিয়মিত পরার জন্য অনেক আরামদায়ক এবং বেশ ফ্যাশনেবল।  

শর্ট পোশাক 

আমাদের দেশে শর্ট পোশাকের তেমন একটা চলন নেই বেললেই চলে। তবে গরমের পোশাক একটু শর্ট হলেই ভালো। বিশেষ করে শর্ট ফতুয়া, শর্ট কামিজ, টিশার্ট ইত্যাদি পোশাক গরমের উপযোগী পোশাক হওয়ার পাশাপাশি অনেব ফ্যামনেবল। আমরা অনেকেই হাতা কাটা জামা পরতে পছন্দ করি তাই এই গরমে ছোট হাতা, থ্রী-কোয়ার্টার হাতা পরাই ভালো।  উঁচু গলার ফতুয়া, কামিজ, ব্লাউজ,টিশার্ট পরিহার করে চারকোণা, পানপাতা ও ভি-আকৃতির গলার পোশাক ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও গরমে স্বস্তির জন্য অনেকে ঘটি হাতার পোশাকও পরে থাকেন। 

স্কার্ফ বা ছাতা 

গরমের দিনে বাহিরে বের হলে যেমন শরীর রক্ষা করা জরুরি তেমন ভাবে মাথাটাকেও রোদের প্রখরতা থেকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই গরমে মাথা সুরক্ষিত রাখার জন্য স্কার্ফ বা ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যার ফলে আপনি রোদ থেকেও রক্ষা পেলেন আর মাথার চুল নষ্ট হওয়া থেকেও মুক্তি পেলেন। এ জন্য গরমের দিনে আমাদের সকলেরই সব সময় একটি ছাতা,স্কার্ফ এবং খাবার পানি সঙ্গে রাখা উচিত।

গরমে কেমন হওয়া উচিত শিশুদের পোশাক

গরমরে সময় বড়দের মত বাচ্চাদের পোশাকের ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখতে হবে কারণ বাচ্চারা বাইরে ঘোরাঘুরি করতে আর খেলতে বেশি পছন্দ করে। তাই বাচ্চাদের পোশাকও পাতলা এবং ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। অভিভাবক হিসেবে এই গরমে বাচ্চাদের জন্য আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই। চলুন যেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের পোশাক বাছার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় গুলো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। 

লিনেন বা সুতি কাপড়

যেসব কাপড় নরম ও হালকা ওজনের হওয়ার পাশাপাশি  শরীরে বায়ুপ্রবাহের ব্যবস্থা করে, বাচ্চাদের জন্য এমন পোশাক বাছাই করুন।সে ক্ষেত্রে কটন বা লিলেন হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। শিশুরা এসব কাপড়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

হালকা রঙের কাপড়

বড়দের পোশাকের মত গ্রীষ্মকালে বাচ্চাদের পোশাকের ক্ষেত্রেও হালকা, উজ্জ্বল এবং সতেজ রঙ নির্বাচন করুন। প্লেইন প্যাস্টেল রঙ অথবা পোলকা ডটের মতো কাপড় বাচ্চাদের জন্য বেছে নিতে পারেন। গরমে বাচ্চাদের অস্বস্তি এড়াতে কালো বা গাঢ় রঙ এড়িয়ে চলুন।

শর্টস বেছে নিন

গ্রীষ্মের অসহনীয় তাপে বাইরে খেলার সময় বাচ্চারা ঘেমে বিরক্ত বোধ করে।বাচ্চাদেরে এই বিরক্তি এড়াতে শর্টস ডেনিম বা কার্গো প্যান্ট বেছে নিন যা টি-শার্টের সাথে বেশ মানানসই।

আকর্ষণীয় প্রিন্ট

হালকা রঙ এবং একটু প্রিন্টেড পোশাকে বাচ্চাদের সুন্দর মানায়। যেহেতু পশুপাখি, কার্টুন বা গাছ পালার ছবি  বাচ্চাদের বেশ আকর্ষণ করে সে ক্ষেত্রে  প্রিন্টেড পোশাকের প্রতি মনোযোগী হন।

ওভারড্রেসিং এড়িয়ে চলুন

গরমের দিনে ভারী পোশাক পরার কারণে বাচ্চাদের ঘামাচি হতে পারে। তাই গরমের জন্য হালকা ওজনের পোশাক বেছে নিন। অতিরিক্ত গহনা বা সরঞ্জাম দিয়ে ওভারড্রেসিং করে বাচ্চাকে অস্বস্তিতে ফেলবেন না।

টুপির ব্যবহার

বড়দের মত এখন বাচ্চাদের জন্যও অনেক ফ্যাশনেবল টুপি বা স্কার্ফ পাওয়া যায় যা এই গরমে অঅপনার বাচ্চাকে প্রচণ্ড তাপ এবং সূর্যের রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখবে।বিশেষ করে বাহিরে বের হওয়ার সময় তাদের মাথায় টুপি, ক্যাপ বা স্কার্ফ পরিয়ে দিয়ে দিন। এতে শিশুরা ঘাম এবং ক্লান্তি থেকে তাদের মাথা রক্ষা করতে পারবে।

আরামদায়ক জুতা

গরমের দিনে বাচ্চাদের পোশাকের পাশাপাশি জুতা বা সেন্ডেলের দিকেও নকর দেওয়া জরুরি। কনেনা সঠিক মাপের জুতা বা সেন্ডেল বাচ্চাদের আরামে রাখবে। বুট বা বন্ধ জুতার পরিবর্তে স্যান্ডেল, ফ্লিপ-ফ্লপ, লোফার বেছে নিতে পারেন যা বাচ্চাদের পায়ের চাপ কমিয়ে বাচ্চাকে স্বস্তিতে রাখবে।

গ্রীষ্মে ছেলেদের পোশাক

গরমে শুধু  আরাম বা স্বাচ্ছন্দ্য নয়, নিজের ব্যক্তিত্ব অটুট রেখে দেখতেও যেন সুন্দর লাগে এটা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকেন। এজন্য এমন পোশাক পরতে হবে যা গরমে আরামও দেবে এবং দেখতেও সুন্দর লাগবে।ছেলেদেরগ্রীষ্মের পোশাক নিয়ে প্রায় সময়ই বিপাকে পড়তে হয়। এজন্য আগে থেকেই যদি আপনি পোশাক নির্বাচন করে রাখতে পারেন তাহলে পুরো গ্রীষ্মকাল আপনি থাকবেন চিন্তা মুক্ত। টি-শার্ট এবং ট্রাউজার ছেলেদের সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক পোশাকের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।বাসা সহ প্রাত্যহিক কাজে বিভিন্ন জায়গায় যেতে টি-শার্টের সঙ্গে কার্গো প্যান্ট অথবা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট অনায়াসে পরতে পারেন।

এছাড়ার এই প্রখর গরমে বাহিরে স্বস্তিতে ঘোরার জন্য হাফহাতা, ব্লক, বাটিক অথবা প্রিন্টের শাটের সঙ্গে গ্যাবার্ডিন বা জিন্স প্যান্টও পরতে পারেন।কর্মজিবী ছেলেদের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের আরামের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশের কথা মাথায় রাখতে হবে। যদি আপনার অফিসে ক্যাজুয়াল লুক অ্যালাউড হয় তাহলে স্ট্রেটকাট জিন্সের সঙ্গে ফতুয়া বা ব্লক প্রিন্টের শার্ট পরতে পারেন। আর তা না হলে আরামদায়ক ফর্মাল লুক নিতে এক কালার অথবা চেক প্রিন্টের ফুল হাতা কটন শার্টের সঙ্গে হালকা কালার গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরতে পারেন।পাঞ্জাবি অথবা হালকা কাজের শেরওয়ানি হতে পারে বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে পরবার জন্য সবচেয়ে বেষ্ট পছন্দ।

তবে খেয়াল রাখবেন গরমে যে পোশকই পরেন না কেনো, চেষ্টা করবেন কাপড়টা যেন হয় শতভাগ সুতি বা নরম এবং হালকা ওজনরে আর রঙটা যেন হয় হালকা। নীল জিনসের সঙ্গে গোল গলার সাদা টি-শার্ট ক্যাজুয়াল স্টাইলে আপনাকে আরাম এনে দেবে। এছাড়াও বাসন্তী রঙের পোলো টি-শার্টের সাথে মিলিয়ে ঘিয়ে রঙের প্যান্ট আর কালো বেল্টে ফ্যাশন ও আরাম দুটোই পাবে দশে দশ।এছাড়াও পরতে পারেন হালকা রঙের শার্টের সাথ মোটা সুতার গ্যাবার্ডিন কাপড়ের ওয়াশ করা চাঁপা সাদা প্যান্ট। অথবা ফুলহাতা সাদা শার্টের সঙ্গে নীল জিনসের প্যান্ট আর রোদচশমায় গরমের দিনেও আপনাকে দেখাবে ফুরফুরে।বিশেষ দিন যেমন শুক্রবার বা কোন দাওয়াতে পরতে পারেন পাতলা সুতি বা খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবি একরঙা প্রিন্স কোট এবং সেন্ডেল বা লোফারের মতন ব্রিদেবল জুতা যা ফ্যাশনের পাশাপাশি আপনাকে রাখবে সতেজ ও ফুরফুরে।

গ্রীষ্মে মেয়েদের পোশাক

গ্রীষ্মে ছেলে মেয়ে উভয়ের পোশাকের ক্ষেত্রেই আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেই সুতি কাপড়ের পোশাক। যদি গরমের জন্য আগে থেকেই পোশাক নির্বাচন করে রাখা যায় তাহলে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় অথবা অফিসে যাবার সময় কোন পোশাক পরবেন সেটা নিয়ে আর সমস্যায় পড়তে হবে না। তবে অবশ্যই পোশাক হতে হবে ঢিলে ঢালা কারণ ঘরের ভেতর ক্যাজুয়াল পোশাক পরে থাকতে থাকতে বাইরে খুব ফরমাল আটশাট পোশাক পরা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া,ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবী মেয়েদের ফ্যাশনেবল হওয়ার পাশাপাশি রুচি সম্মত হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েদের জন্য গরমের উৎকৃষ্ট এবং ফ্যাশনেবল পোশাক হল সুতি বা লিলেন কাপড়ের কুর্তি বা সালোয়ার। যারা অফিস-আদালতে কাজ করেন তারাও হালকা ব্লক প্রিন্টের সুতি বা লিনেন সালোয়ার কামিজ অথবা কুর্তির সাথে পালাজ্জো, টাইটস অথবা পাতলা ডেনিম পরতে পারেন। নিজেকে আরেকটু গর্জিয়াস দেখাতে এর সঙ্গে পাতলা সিল্কের একটা স্টোল গলায় ঝুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই অফিসের পরিবেশ যাচাই করে নিতে ভুলবেন না।

অফিসের পরিবেশ যদি ফ্রেন্ডলি হয় সে ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ের ফতুয়া বা টপ পরেও অফিস করতে পারেন এই গরমে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে যারা কাজের জন্য প্রায় সময়ই বাহিরে বের হয়। আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা হন,সে ক্ষেত্রে টি শার্ট-জিন্স অথবা স্কার্ট-টপের মত উৎকৃষ্ট এবং ফ্যাশনেবল ক্যাজুয়াল পোশাক পরতে পারেন।মেয়েদের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে কাপড়ের পাশাপশি রঙ নির্বাচনেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তবে এই গরম পোশাকের রঙ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাদা, হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রঙের পোশাকগুলো প্রাধান্য দিন। কারণ এগুলো শুধু তাপ শোষণই করে না বরং আপনাকে করে তুলবে আকর্ষনীয় এবং সবার থেকে আলাদা। যারা সবসময় হাইনেক পরেন তারা গরমের সময়টাতে একটু কলার ছাড়া বড় গলার সাথে ছোট হাতার জামা পরে দেখতে পারেন। কারণ গরমে ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি কোয়ার্টার সব সময় আরামদায়ক হয় না।

গরমে খুব উজ্জ্বল আর গাঢ় রঙের পোশাক না পরে সুতি কাপড়ের সঙ্গে লিনেন, দুপিয়ান, ভয়েল, মসলিন, চিকেন ও তাতের কাপড় পরতে পারেন অনায়াসে যা আপনাকে স্বস্তিতে চলাফেরা ও প্রয়োজনীয় কাজ করতে সহায়তা করবে। আপনি ছাত্রি. চাকুরিজীবি বা ব্যবসায়ী যাই হন না কেন বিয়ে-শাদীর মতো উৎসব-অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় পোশাক নির্বাচন করা একটু কঠিন হয়ে যায়। তবে এমন অনুষ্ঠানগুলোতে সুতি,লেলিন,জর্জেট, জামদানি অথবা এমব্রয়ডারি করা সালোয়ার বা মসলিন শাড়ি আর ম্যাচিং করে উঁচু নুড হিল বা নুড সেন্ডেল পরে গেলে আরাম তো হবেই আপনাকে মানাবেও দারুন।

এছাড়াও উৎসবে পরতে পারেন কৃত্রিম মসলিন বা পাতলা চোষা কাতান যা ফ্যাশনেবল এবং আরামদায়ক।বর্তমান সময়ে আমরা সবাই ফ্যাশন সচেতন।যেহেতু ফ্যাশন এবং আবহাওয়া এক অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাই আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে পোশাক বাছাই করার আগে অবশ্যই সেটি আবহাওয়া উপযোগী কিনা-এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কারণ গরমের দিনে পোশাক অবশ্যই হতে হবে আরামদায়ক।বর্তমানে ফ্যাশন হাউসগুলোতে ছেলে,মেয়ে বা বাচ্চা সবার জন্যই জন্য সুতি বা লিলেন কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পাশাপশি বাটিক, ভেজিটেবল ডাই, টাইডাই, সুবোরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক ইত্যাদির মাধ্যমে ডিজাইন করা প্রচুর আরামদায়ক পোশাক পাওযা যায়। জিওম্যাট্রিক, ফ্লোরাল, লাইন, বিভিন্ন ফর্ম ব্যবহার করে এসব পোশাকে নানা রকম ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যা একাধারে আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল।এছাড়াও রঙ হিসেবে গরমে বেছে নিতে পারেন নীল, ধূসর, সাদা, অফহোয়াইট, মেরুন ইত্যাদি।এসব পোশাক ক্যাজুয়াল হিসেবেও যেমন ব্যবহার করা যাবে, তেমনি ফর্মাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।  Facebook Page:https://www.facebook.com/MumoLifeStyle123

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *