ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের উপকারিতা ও সাবধানতা

সকল প্রকার ত্বকের জন্য আর্দ্রতা প্রয়োজন। আপনার ত্বক শুষ্ক,তৈলাক্ত,কম্বাইন্ড বা সেনসিটিভ যেমনই হোক না কেন ময়েশ্চারাইজারের সাথে আপনার মুখের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ত্বকের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে সঠিক ময়েশ্চারাইজারটি বাছাই করাটাই গুরুত্তপূর্ণ ব্যপার। আমাদের আজকের এই ব্লগে আমরা জানবো ময়েশ্চারাইজার কি, এর উপকারিতা কি এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যাবহারে কি কি সাবধানতা মেনে চলা উচিত। 

ময়েশ্চারাইজার কি

ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে, সেটি ধরে রাখতে এবং ত্বকের উপরে একটি হাল্কা অদৃশ্য আস্তরণ তৈরি করে ত্বকে উপস্থিত জলের অণুকে ত্বক থেকে বাইরে চলে যাওয়ার পথে বাধা প্রদান করে। ক্রিমের তুলনায় ময়েশ্চারাইজার খানিকটা ঘন হয়।ময়েশ্চারাইজার ত্বকের প্রতিটি কোষে কোষে ঢুকে ক্ষত নিরাময় করে। এতে জলের পরিমাণ বেশি থাকায় ত্বকের উপরিভাগের ক্ষত নিরাময় করে। আপনার ত্বক যেমনই হোক না কেন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজারের গুরুত্ব অপরিসীম। এক কথাই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের উপকারিতা

শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করা ময়েশ্চারাইজারের প্রধান কাজ বলা যেতে পারে। সব রকমের স্কিনের সাথে সাথে সেনসিটিভ স্কিনের বিশেষ খেয়াল নিয়ে থাকে ময়েশ্চারাইজার। স্কিনকে ভেতর থেকে হেলদি রাখে, যাতে বাইরের দূষণ স্কিনের ক্ষতি করতে না পারে সহজে। এছাড়াও ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, মুখে হওয়া কালো দাগ, ছোপ থেকে আমাদের দূরে রাখতে ময়েশ্চারাইজা কার্যকারী অবদান রাখে। ময়শ্চারাইজেশনের উপকারিতা ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ

  • শুষ্কতা রোধ করা
  • বয়েসের ছাপ কমানো
  • ব্রণর সাথে লড়াইয়ে সহায়ক
  • সূর্যের থেকে সুরক্ষা
  • স্কিনকে স্মুদ বা প্রশমিত রাখা

শুষ্কতা রোধ করাশীত হোক বা গরম, এসির ঠাণ্ডা হোক বা ঘরের নিজস্ব তাপমাত্রা, নানা কারণে আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা শুকিয়ে  ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক। ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের এই হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতের স্কিন সম্পর্কিত নানা ক্ষতি রোধে সহায়তা করে।

বয়েসের ছাপ কমানোত্বক হাইড্রেটেড থাকলে বয়েসের ছাপ বোঝা যায় না। ভাবছেন আপনাকে কেন বলছি? আসলে আগাম সুরক্ষা নেওয়া থাকলে বয়স হলে সেই ছাপ রোধ হবে সহজেই। স্কিন যদি এখন থেকেই সঠিক ভাবে হাইড্রেটেড থাকে তাহলে মুখে বয়েছের ছাপ বা বলিরেখা সহজে দেখা দেবে না। যা স্কিন ময়শ্চারাইজেশনের মাধ্যমে করা সম্ভব।

ব্রণর সাথে লড়াইয়ে সহায়কসেনসিটিভ এবং তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সম্ভাবনা বেশি। তাই সেনসিটিভ এবং তৈলাক্ত ত্বকে আরও আর্দ্রতা যুক্ত করা স্কিনের জন্য প্রয়োজন। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে এটি আপনার গ্রন্থিগুলিকে আরও তেল উৎপাদনে উৎসাহিত করে যা আপনার ছিদ্রগুলির মুখ আটকে রেখে ব্রেকআউট তৈরি করতে পারে। সুতরাং,ত্বক সঠিকভাবে হাইড্রেটেড হলে ত্বকে তেল উৎপাদন কম হবে। ফলে আপনি থাকবেন ব্রণ ফ্রি।

সূর্যের থেকে সুরক্ষাচর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা শীতকালেও প্রতিদিন SPF ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তাই অবশ্যই সূর্য সুরক্ষাযুক্ত ২-ইন-১ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় পাশাপাশি সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে স্কিনকে রক্ষা করবে। 

স্কিনকে স্মুদ বা প্রশমিত রাখাসেনসিটিভ স্কিনের অন্যতম সমস্যার মধ্যে অন্যতম হল লালচে ভাব, চুলকানি, র‍্যাসের মত সমস্যা। স্কিন রুক্ষ থাকলে এইগুলো বেশি করে প্রকট হয়। ত্বক স্মুদ বা প্রশমিত থাকলে এগুলো দেখা দেয় না। তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের দ্বারা এই ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন অনায়াসে।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে সাবধানতা

দ্য এসথেটিক ক্লিনিকের পরামর্শক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এবং ডার্মাটো-সার্জন Dr Rinky Kapoor এর মতে, ”খুব বেশি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করার ফলে ত্বকে আরও ব্রেকআউট, ব্ল্যাকহেডস, আটকে থাকা ছিদ্র, বাধা এবং শুষ্কতা হতে পারে। ত্বক অনেক কিছুই  শোষণ করতে পারে যার কারণে এটি ঘটে”। তিনি আরো বলেন ” অনেক লোক অতিরিক্ত ময়শ্চারাইজ করার ঝুঁকি চালায় এবং ভালোর চেয়ে ত্বকের বেশি ক্ষতি করে,”। তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।স্পর্শকাতর ত্বকে একটু অসাবধান হলেই জ্বালাপোড়া হয় অথবা র‌্যাশ বের হয়ে যায়। তাই ত্বকের যত্ন নিতে গিয়ে যদি ইরিটেশন বা জ্বালা বোধ হয় তাহলে বুঝবেন এই প্রসাধনী সামগ্রীটি আপনার ত্বকের জন্য বাছায় করা সঠিক হয়নি। তাই যে সকল ময়েশ্চারাইজারে ত্বকে ইরিটেশন বা জ্বালা বোধ হবে এমন উপাদান নেই সেটা নির্বাচন করুন।ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে অবশ্যই হাত ভালো করে ধূয়ে নিন এবং উন্নত মানের ফেস ওয়াশ বা ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার কুরন।যদি ঘরোয়া ভাবে ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের, টোনার এবং ক্লিনজার তৈরী করেন তাহলে খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন ৬/৭ দিনের পুরোনো না হয় কারন বাড়ীতে তৈরী ময়েশ্চারাইজার, টোনার এবং ক্লিনজার ফ্রিজে রেখে চার থেকে পাঁচদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না। আশাকরা যায় এ ধরনের ছোটখাটো ঘরোয়া যত্ন আপনার স্পর্শকাতর ত্বককে করে তুলবে লাবণ্যময়।যতটা সম্ভব কম কসমেটিক পণ্য ব্যবহারের অভ্যাস করুন এবং কেনার সময় ত্বকের জ্বালা করে এমন উপাদানগুলিকে দুবার পরীক্ষা করুন। কারণ সকল ত্বকে সকল প্রসাধনী পণ্য একই রকম কাজ করে না।এছাড়া কোন স্কিনকেয়ার পণ্যটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত তা নির্ধারণ করতে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।   ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের উপকারিতা ও সাবধানতা, ১০০% অথেনটিক  এবং নিত্যনতুন স্কিন কেয়ার পণ্য কিনতে ক্লিক করুন এখানেhttps://mumolifestyle.com/product-category/skincare-items/?v=fbd25224d617  Facebook Page: https://www.facebook.com/MumoLifeStyle123