যুগ যুগ ধরে মানুষ নরম এবং কোমল ত্বক পাওয়ার জন্য কত কিছুইনা করে আসছে। ত্বক এবং মুখের ময়েশ্চারাইজারের অদ্ভুত এক ইতিহাস আছে। আজ থেকে ১০,০০০ বছর পূর্বে মানুষ যখন বিভিন্ন স্কিন ক্রিম ব্যবহার করতো তখন নেটিভ আমেরিকানরা নিজেদের উষ্ণ রাখার জন্য নিজেদের উপর পশুর চর্বি ঘষতে শুরু করেছিল। সমস্ত ত্বকের জন্য আর্দ্রতা প্রয়োজন। আপনার ত্বক শুষ্ক,তৈলাক্ত,কম্বাইন্ড বা সেনসিটিভ যেমনই হোক না কেন ময়েশ্চারাইজারের সাথে আপনার মুখের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ত্বকের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে সঠিক ময়েশ্চারাইজারটি বাছাই করাটাই গুরুত্তপূর্ণ ব্যপার। আমরা জানি ব্যপারটা এখনও আপনার কাছে পরিষ্কার না। চিন্তার কোন কারন নেই, আজকের এই ব্লগে আমরা আপনার মনের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এই ব্লগটি পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ত্বকের যত্নে আপনার কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয়। এর জন্য প্রথমে আপনাকে জানতে হবে ময়েশ্চারাইজার কি ? চলুন জেনে নেওয়া যাক ময়েশ্চারাইজার সম্পর্কে।
ময়েশ্চারাইজার কি?

১১০০ দশকে জার্মানির বিনজেনে হিলডেগার্ড নামক এক ভদ্র মহিলা,যিনি সেন্ট হিলডেগার্ড নামেও পরিচিত, নিজের ত্বককে সতেজ রাখার জন্য একটি ঘরোয়া রেসিপি তৈরী করেন। তিনি ফুটন্ত পানিতে বার্লি রান্না করে সেটা ছেঁকে মুখে লাগিয়ে তাজা “বাষ্পযুক্ত” অনুভূতি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে এটাই পৃথিবীর প্রথম ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ঘটনা। এজন্য আমরা বলতে পারি ময়েশ্চারাইজারের আবিষ্কারক হচ্ছেন জার্মানির বিনজেনের হিলডেগার্ড ।ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে, সেটি ধরে রাখতে এবং ত্বকের উপরে একটি হাল্কা অদৃশ্য আস্তরণ তৈরি করে ত্বকে উপস্থিত জলের অণুকে ত্বক থেকে বাইরে চলে যাওয়ার পথে বাধা প্রদান করে। ক্রিমের তুলনায় ময়েশ্চারাইজার খানিকটা ঘন হয়।ময়েশ্চারাইজার ত্বকের প্রতিটি কোষে কোষে ঢুকে ক্ষত নিরাময় করে। এতে জলের পরিমাণ বেশি থাকায় ত্বকের উপরিভাগের ক্ষত নিরাময় করে। আপনার ত্বক যেমনই হোক না কেন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজারেরগুরুত্ব অপরিসীম। এক কথাই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ময়েশ্চারাইজার কত ধরনের হয়ঃ
বহুল ব্যবহৃত এই ‘ময়েশ্চারাইজার’কে প্রসাধনীও বলা যায় আবার ‘থেরাপিউটিক’ পণ্যের তালিকাতেও ফেলা যায়। কোনোটা যেমন ত্বকের আর্দ্রতা পুনরুদ্ধার করে তেমনি কোনোটা আবার আর্দ্রভাবকে আরও উন্নত করে। এতে ব্যবহৃত উপাদানের ভিত্তিতে ‘ময়েশ্চারাইজার’কে চারভাগে ভাগ করা যায়।
হিউমেক্ট্যান্টস
Humectants ত্বকের বাইরের অংশ বা ‘স্ট্রাটাম কর্নেয়াম’য়ের আর্দ্রভাবকে আরও উন্নত করে। ত্বকের অস্বাভাবিক পুরুত্ব কমাতে এগুলো ব্যবহার হয়। অতিরিক্ত শুষ্ক এবং চুলকানি প্রবণ ত্বকের চামড়া ওঠার সমস্যা সারাতেও এই ধরনের ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহার হয়। Humectants ত্বকের ভেতরের অংশ থেকে তরল নিঃসরণ বাড়ায় যেন বাইরের আবহাওয়াতে ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা না হারায়। আর্দ্রতাকে ত্বকের আটকে রাখে এমন ‘ময়েশ্চারাইজার’য়ের সঙ্গে একত্রিত করে এই উপাদান ব্যবহার করা হয়। Glycerin, Sorbitol, Urea, Alpha hydroxy acids ও Sugar হল ‘ Humectants’ ধরনের উপাদান।
অক্লুসিভস
Occlusives ত্বকের ভেতরের অংশ থেকে নিঃসরিত তরলকে ত্বকের বাইরের অংশের মাঝে আটকে রাখে ফলে ত্বকে সর্বদা তারল্য বজার থাকে। আর্দ্র ত্বকের উপর ‘Hydrophobic Barrier আবরণ তৈরি করতে সক্ষম এই উপাদানগুলো চমৎকার কাজ করে। “Petroleum” হল সবচাইতে কার্যকর ‘Occlusives ’ ধরনের ‘ময়েশ্চারাইজার’ যা ত্বকের আর্দ্রতা হারানোর সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যদিকে ‘Lanolin, Mineral oil, Silicone’ ইত্যাদি আর্দ্রতা হারানোর মাত্রা কমায় মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। তবে Occlusives এর সবচাইতে বড় সমস্যাগুলো হল দুর্গন্ধ, অ্যালার্জির আশঙ্কা এবং ত্বকে সৃষ্টি করে আঠালোভাব।
ইমোলিন্টস
Emollients হল ‘লং চেইন স্যাচুারেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’ যা ত্বকের উপরিভাগে প্রয়োগযোগ্য বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহার হয়।‘ময়েশ্চারাইজার’ তৈরিতে ব্যবহার করলে এগুলো ত্বকের কোষের মাঝে জমা হয়ে ত্বক নরম করে। ‘ময়েশ্চারাইজার’য়ে ব্যবহৃত ‘Emollients’ এর মধ্যে আছে ‘Squalene, ‘Cholesterol’ এবং ‘Fatty Acids’ যা সাধারণত সংগ্রহ করা হয় নারিকেল ও পাম তেল থেকে। সেনসিটিভ ত্বকেই এগুলো ব্যবহার হয় বেশি। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ‘Oil free Emollients’ বা Glycol’ ও ‘Glycerin’ যুক্ত Emollients ব্যবহার করতে পারেন । তবে সেনসিটিভ ত্বকে এই উপাদানগুলো প্রয়োগ করলে প্রচণ্ড শুষ্কতা ও অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার
প্রাকৃতিক ‘অ্যামিনো অ্যাসিড’, ‘ইউরোক্যানিক অ্যাসিড’, ‘ইনোর্গানিক সল্ট’, চিনি, ‘ল্যাকটিক অ্যাসিড ও ‘ইউরিয়া’ হল সাধারণ কিছু প্রাকৃতিক ‘ময়েশ্চারাইজার’। প্রকৃতি থেকে আর্দ্রতা ত্বকের টেনে আনতে বেশ কার্যকর এই উপাদানগুলো। ফলে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকলেও ত্বক আর্দ্র রাখতে পারে এই উপাদান সমৃদ্ধ ‘ময়েশ্চারাইজার’। ত্বক আর্দ্রতা রাখার ক্ষেত্রে ‘ময়েশ্চারাইজার’য়ের সর্বোচ্চ উপকার পেতে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এদের নিয়মিত ব্যবহার।
ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের কাজঃ
ময়েশ্চারাইজার বা ফেস ময়েশ্চারাইজার হল একটি লোশন, বা ক্রিম ইমালসন, অয়েন্টমেন্ট বা বাম যা ইমোলিয়েন্ট দিয়ে তৈরি যা ত্বককে হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করে। ময়েশ্চারাইজারগুলি ত্বকের পৃষ্ঠের স্তরগুলিকে হাইড্রেট করে। ময়েশ্চারাইজারের প্রধান কাজ হল ত্বককে সিল করা, আর্দ্রতা এবং পুষ্টিতে লক করা এবং ত্বককে পরিবেশগত জ্বালা থেকে রক্ষা করে। ময়েশ্চারাইজার বা ফেস ময়েশ্চারাইজার দুটি উপায়ে কাজ করে। প্রথমত ময়েশ্চারাইজার ত্বকে আর্দ্রতা আটকে রাখে, একটি অস্থায়ী সীল তৈরি করে এবং দ্বিতীয়ত আপনার ত্বকের বাইরের স্তরে হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা পুনরুদ্ধার করে। ময়েশ্চারাইজারগুলিতে 4 শ্রেণীর উপাদান রয়েছে। Petrolatum এর মতো Occlusives একটি প্রতিরক্ষামূলক সীল তৈরি করে; Hyaluronic acid এবং Bionic acid এর মতো Humectants ত্বকের গভীর স্তর এবং বায়ুমণ্ডল থেকে আর্দ্রতা টেনে নেয়; Glycerin এর মতো Emollients ফাটল এবং রুক্ষতা পূরণ করে ত্বককে মসৃণ করতে সাহায্য করে এবং Ceramide ও Polyhydroxy acid (PHA) Gluconolactone এর মতো বাধা-মেরামত উপাদান, প্রাকৃতিক চর্বি এবং ত্বকের কন্ডিশনারগুলিকে প্রতিস্থাপন করে, ত্বকের বাধাকে সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।বেশিরভাগ ময়েশ্চারাইজার এই সকল উপাদানগুলির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় – তাই আপনার ত্বকের ধরন অথবা ত্বকের উদ্বেগের উপর ভিত্তি করে একটি ময়েশ্চারাইজার বেছে নেওয়া ভাল।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়মঃ
আপনি আপনার ত্বককে অনেক ভালো বোঝেন। তাই আপনিই বুঝবেন কখন এটি ব্যবহার করা উচিৎ। ত্বকের যত্নে কসমেটিক্স পণ্যগুলির সঠিক প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত সক্রিয় উপাদান কার্যকর হওয়ার জন্য ডার্মিসে প্রবেশ করে। তাই সঠিক উপায়ে পণ্য প্রয়োগ না করলে সক্রিয় উপাদানগুলি কেবল পৃষ্ঠের উপরই থাকবে এবং ত্বকের ভেতরে কোনও প্রভাব ফেলবেনা। সাধারণত দিনের শুরুতে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও দুপুরে গোসলের পর ত্বকের কোষ অনেক নরম হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সেই সময় শরীরে আদ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলায় বেশিরভাগ সময়ে কাজের পর আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে তা পরিষ্কার করে ধুয়ে আমাদের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেইসওয়াস বা ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে তারপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আবারো ত্বক ভালো করে ফেইসওয়াস বা ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে তা কিছুটা ড্রাই হলে ত্বকে টোনার, সিরাম ব্যবহারের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে অনেক ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়।ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার এর আগে ত্বকে কোনো ওয়েল বা তেল ব্যবহার করবেন না।চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ হাওয়ার্ড সোবেল এর মতে আমাদের ত্বকের 24/7 আর্দ্রতা প্রয়োজন। কিন্তু আপনি কি জানেন ত্বক সবচেয়ে বেশি কখন আর্দ্রতা হারায়? রাতে আমাদের শরীর সবচেয়ে বেশী আর্দ্রতা হারায়। প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের তেল উৎপাদনে মধ্যাহ্নে শীর্ষে। কিন্তু রাতের চিত্রটি একেবারেই আলাদা। অতএব, যখন আপনি প্রাকৃতিক তেলের প্রতিরক্ষামূলক স্তরটি হারাবেন, তখন আপনার ত্বকও আর্দ্রতা হারাবে।আর তাই রাতারাতি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে আর্দ্রতার ক্ষতি পূরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাতে আমাদের ত্বক রিপিয়ার মুডে থাকে। তাই ক্ষতিগ্রস্থ্য কোষগুলি মেরামত এবং পুনর্নির্মাণ করার সঠিক সময় হলো রাত। কারন গভীর ঘুমের সময় বেশিরভাগ কোষের টার্নওভার এবং পুনর্জন্ম ঘটে। রাতারাতি আর্দ্রতা হ্রাস আপনার ত্বককে সবচেয়ে শুষ্ক করে এবং ত্বকের প্রতিরক্ষা বাধা বিকল করে দেয়।
ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারের উপকারিতাঃ
শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করা ময়েশ্চারাইজারের প্রধান কাজ বলা যেতে পারে। সব রকমের স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার বিশেষ দরকারি পণ্য। স্কিনকে ভেতর থেকে হেলদি রাখতে,বাইরের দূষণ থেকে স্কিনকে রক্ষা করতে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন। এছাড়াও ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, মুখে হওয়া কালো দাগ, ছোপ থেকে আমাদের দূরে রাখতে ময়েশ্চারাইজা কার্যকারী অবদান রাখে।
ময়েশ্চারাইজেশনের উপকারিতা ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
- শুষ্কতা রোধ করা
- বয়েসের ছাপ কমানো
- ব্রণর সাথে লড়াইয়ে সহায়ক
- সূর্যের থেকে সুরক্ষা
- স্কিনকে স্মুদ বা প্রশমিত রাখা
১. শুষ্কতা রোধ করা
শীত হোক বা গরম, এসির ঠাণ্ডা হোক বা ঘরের নিজস্ব তাপমাত্রা, নানা কারণে আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা শুকিয়ে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক। ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের এই হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতের স্কিন সম্পর্কিত নানা ক্ষতি রোধে সহায়তা করে।
২. বয়েসের ছাপ কমানো
ত্বক হাইড্রেটেড থাকলে বয়েসের ছাপ বোঝা যায় না। ভাবছেন আপনাকে কেন বলছি? আসলে আগাম সুরক্ষা নেওয়া থাকলে বয়স হলে সেই ছাপ রোধ হবে সহজেই। স্কিন যদি এখন থেকেই সঠিক ভাবে হাইড্রেটেড থাকে তাহলে মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা সহজে দেখা দেবে না।
৩. ব্রণের সাথে লড়াইয়ে সহায়ক
সেনসিটিভ এবং তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সম্ভাবনা বেশি থাকায় সেনসিটিভ এবং তৈলাক্ত ত্বকে আরও আর্দ্রতা যুক্ত করা প্রয়োজন। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে এটি আপনার গ্রন্থিগুলিকে আরও তেল উৎপাদনে উৎসাহিত করে যা আপনার ছিদ্রগুলির মুখ আটকে রেখে ব্রেকআউট তৈরি করতে পারে। সুতরাং,ত্বক সঠিকভাবে হাইড্রেটেড হলে ত্বকে তেল উৎপাদন কম হবে। ফলে আপনি থাকবেন ব্রণ ফ্রি।
৪. সূর্যের থেকে সুরক্ষা
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা শীতকালেও প্রতিদিন SPF ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তাই অবশ্যই সূর্য সুরক্ষাযুক্ত ২-ইন-১ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে স্কিনকে রক্ষা করবে।
৫. স্কিনকে স্মুদ বা প্রশমিত রাখা
লালচে ভাব, চুলকানি, র্যাসের মত সমস্যা সেনসিটিভ স্কিনের অন্যতম সমস্যার মধ্যে একটি। স্কিন রুক্ষ থাকলে এইগুলো বেশি করে প্রকট হয়। ত্বক স্মুদ বা প্রশমিত থাকলে এগুলো দেখা দেয় না। তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের দ্বারা এই ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন অনায়াসে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে সাবধানতাঃ
দ্য এসথেটিক ক্লিনিকের পরামর্শক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এবং ডার্মাটো-সার্জন Dr Rinky Kapoor এর মতে, ”খুব বেশি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করার ফলে ত্বকে আরও ব্রেকআউট, ব্ল্যাকহেডস, আটকে থাকা ছিদ্র, বাধা এবং শুষ্কতা হতে পারে। ত্বক অনেক কিছুই শোষণ করতে পারে যার কারণে এটি ঘটে”। তিনি আরো বলেন ” অনেক লোক অতিরিক্ত ময়শ্চারাইজ করার ঝুঁকি চালায় এবং ভালোর চেয়ে ত্বকের বেশি ক্ষতি করে,”। তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- স্পর্শকাতর ত্বকে একটু অসাবধান হলেই জ্বালাপোড়া হয় অথবা র্যাশ বের হয়ে যায়। তাই ত্বকের যত্ন নিতে গিয়ে যদি ইরিটেশন বা জ্বালা বোধ হয় তাহলে বুঝবেন এই প্রসাধনী সামগ্রীটি আপনার ত্বকের জন্য বাছায় করা সঠিক হয়নি। তাই যে সকল ময়েশ্চারাইজারে ত্বকে ইরিটেশন বা জ্বালা বোধ হবে এমন উপাদান নেই সেটা নির্বাচন করুন।
- ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে অবশ্যই হাত ভালো করে ধূয়ে নিন এবং উন্নত মানের ফেস ওয়াশ বা ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার কুরন।
- যদি ঘরোয়া ভাবে ময়েশ্চারাইজার, টোনার এবং ক্লিনজার তৈরী করেন তাহলে খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন ৬/৭ দিনের পুরোনো না হয়। কারন বাড়ীতে তৈরী ময়েশ্চারাইজার, টোনার এবং ক্লিনজার ফ্রিজে রেখে চার থেকে পাঁচদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না। আশাকরা যায় এ ধরনের ছোটখাটো ঘরোয়া যত্ন আপনার স্পর্শকাতর ত্বককে করে তুলবে লাবণ্যময়।
যতটা সম্ভব কম কসমেটিক পণ্য ব্যবহারের অভ্যাস করুন এবং কেনার সময় ত্বকের জ্বালা করে এমন উপাদানগুলিকে দুবার পরীক্ষা করুন। কারণ সংবেদনশীল ত্বকে সকল প্রসাধনী পণ্য একই রকম কাজ করে না।এছাড়া কোন স্কিনকেয়ার পণ্যটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত তা নির্ধারণ করতে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।